ঢাকা, ২৯ নভেম্বর ২০১৯ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ফার্মগেটের খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মৎস্যজীবী লীগের জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে আন্দোলনের নামে সহিংসতা করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে সমুচিত জবাব দেয়া হবে।
তিনি বলেছেন, ‘আমি বিএনপির উদ্দেশে পরিষ্কার করে বলতে চাই, তারা যদি শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন করে, তাহলে আমরা তা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবো। আর যদি নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করা হয় তাহলে জবাব দিয়ে দেবো।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি যদি মনে করে সহিংসতা সৃষ্টি করে, দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করবেন, তাহলে আপনারা বোকার স্বর্গে আছেন।
নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সবাই প্রস্তুত হয়ে যান, এখনও ষড়যন্ত্র চলছে। এখনও চক্রান্ত চলছে, শেখ হাসিনার জনপ্রিয় সরকারকে হটানোর চক্রান্ত চলছে। এই চক্রান্ত রুখতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, উন্নয়ন অর্জনের পরও বিএনপি ও তার দোসররা সরকারে উন্নয়ন দেখে না। তারা চোখে কালো চশমা পড়েছে। কালো চশমার ফাঁক দিয়ে তারা উন্নয়ন দেখতে পায় না। আর জনগণ তাদের চায় না। আন্দোলন করতে ব্যর্থ, নির্বাচনে ব্যর্থ। এখন তাদের অবলম্বন হচ্ছে প্রেস ব্রিফিং, তাদের অবলম্বন হচ্ছে নালিশ। বিএনপি এখন বাংলাদেশ নালিশ পার্টি হয়ে গেছে। এখন দেশে ঠাঁই না পেয়ে বিদেশিদের কাছে নালিশ দিচ্ছে।
খালেদা জিয়া মুক্তি বিষয়ে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি সেটা আমরা বারবার বলেছি আমরা তাকে জেলে নেইনি। আদালতের মামলার রায়ে জেলে আছেন। আপনারা আইনি লড়াই করে তাকে মুক্ত করুন। আমাদের সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না।’‘কিন্তু বিএনপি আদালত মানে না, আইনের শাসন মানে না, বিচার মানে না, সালিশ মানে না। আদালত প্রাঙ্গণে তারা খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আদালতের ওপর চাপ দিতে সেখানে তারা ভাঙচুর করেছে। তারা পুলিশের ওপর হামলা করেছে, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে। আদালত প্রাঙ্গণকে রণাঙ্গনে পরিণত করেছে। এরা ক্ষমতায় আসলে দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন স্বাধীন বিচারব্যবস্থার তাদের হাতে নিরাপদ নয়।’
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মৎস্যজীবী লীগের নেতাকর্মীদের উৎসাহ-উদ্দীপনায় অভিনন্দন জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনাদের সম্মেলন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার মতোই। সারাদেশ থেকে প্রতিনিধিরা এসেছেন এবং বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটা আমি আমাদের নেত্রী আমাদের সকলের অভিভাবক দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে আমি জানিয়েছি।’মৎস্যজীবী লীগের নতুন নেতৃত্ব সংগঠনটিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
‘আজকে মৎস্যজীবী লীগের সমাবেশে সম্মেলন উপলক্ষে আমি আপনাদের উপস্থিতি দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছি এবং আমরা যারা এখানে আছি তারা অভিভূত। আপনাদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি মৎস্যজীবী লীগকে আগামী দিনে নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে আরও শক্তিশালী করবে, আরও গতিশীল করবে, আরও প্রাণবন্ত করবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার উন্নয়নের মহাসড়কে যে অভিযাত্রা, উন্নয়নের দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে, আমাদের এই মুক্তির সংগ্রামের কাণ্ডারি শেখ হাসিনার সেই আন্দোলনকে আরও বেগবান করবে। আরও ত্বরান্বিত করবে এটাই আমি আপনাদের কাছে প্রত্যাশা করি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মৎস্যজীবী লীগের সত্যিকার অর্থেই মৎস্যজীবীদের প্রতিনিধিত্বশীল নেতৃত্ব দরকার। কোনো চাঁদাবাজের দোকান আমরা শুনতে চাই। মৎস্যজীবীদের সাথে কোন সম্পর্ক নেই, ঢাকায় বসে বসে একটা কার্ড বানিয়ে, নাম কার্ড বানিয়ে জায়গায় জায়গায় দিয়ে চাঁদাবাজি করবে এমন নেতা আমাদের দরকার নেই।’
‘মৎসজীবী লীগের সবাইকে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে হবে। তারা মৎস্যজীবী লীগ কোন অর্থে ব্যাকগ্রাউন্ড জানতে হবে, ব্যাকগ্রাউন্ড না জেনে এখানে বসে ক্ষমতার দাপটে নেতাগিরি করবেন নিয়মিত বিভিন্ন অফিসে গিয়ে চাঁদাবাজি করবে এ ধরনের লোককে বাদ দিতে হবে। দেখলাম যে মৎস্য উৎপাদনে আমরা তৃতীয় স্থানে। কাজেই এখানে একটা সুন্দর ভালো ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব দরকার।’ যোগ করেন ওবায়দুল কাদের।
‘সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক নারায়ন চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ।
এর আগে বেলা ১১টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলন উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
Leave a Reply